ইনসমনিয়া"একটি ঘুমের সমস্যা যার কারনে মানুষের ঘুম আসতে এবং ঘুমিয়ে থাকতে সমস্যা হয়।

"ইনসমনিয়া"
একটি ঘুমের সমস্যা যার কারনে মানুষের ঘুম আসতে এবং ঘুমিয়ে থাকতে সমস্যা হয়। বাঁচতে হলে ঘুমোতেই হবে! 
কিন্তু যাদের রয়েছে ইনসমনিয়া সমস্যা? বিশেষ করে অনিদ্রারমতো ভয়াবহ যন্ত্রণা যাদের রয়েছে, তারাই বুঝতে পারেন ঘুমের মূল্য!ভালো ঘুম ওষুধের থেকেও ভালো কাজ করে।
অনেক আছে যারা রাতের পর রাত শুয়ে জেগে থাকে, ঘুমানোর চেষ্টা করলেও তাদের ঘুম আসে না। ঘুমের এই সমস্যা নিয়মিত চলতে থাকলে ক্রনিক (chronic) হয়ে পরে অসুখে পরিণত হয়। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে ইনসমনিয়া (insomnia)।

অনিদ্রা নিয়ে গবেষনায় যাওয়ার আগে জেনে নিই ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কেমনঃ
পূর্ণবয়স্ক মানুষদের – ৭ থেকে ৯ ঘন্টা
শিশুদের – ৯ থেকে ১৩ ঘন্টা
ছোট বাচ্চাদের – ১২ থেকে ১৭ ঘন্টা
 
ইনসোমনিয়া হওয়ার কারণঃ
★নিউরোহরমোনাল অসামঞ্জস্য 
★প্রচন্ড মানসিক চাপ
★অসুস্থতা
★শারীরিক কিছু সমস্যায়, যেমন- আর্থাইটিস, বুকজ্বালা, মাথাব্যথা, দাঁতের সমস্যা, লিভার, ফুসফুস বা কিডনির সমস্যা ইত্যাদি 
★পরিবেশগত সমস্যা (যেমন শব্দ, আলো, উচ্চ তাপমাত্রা অথবা অতিরিক্ত শীত)
★কোন ঔষধ (যেমন, ঠান্ডা, এলার্জি, বিষণ্নতা, হাই ব্লাড প্রেশার, এজমা, ইত্যাদির ঔষধ) 
★ঘুমের সময়সুচির পরিবর্তন হলে 

ইনসমনিয়ার লক্ষণঃ
★দিনের বেলা ঘুম ঘুম ভাব লেগে থাকতে পারে কিন্তু ঘুম আসে নাহ
★সারাদিন ক্লান্তি লাগতে পারে
★মেজাজ খিট খিটে হয়ে থাকতে পারে
★ক্লান্তির কারণে দিনের বেলা কোন কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট হতে পারে

 করনীয়ঃ
★ প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন।
★দিনের বেলা না ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
★ঘুমের আগে দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল, কম্পিউটার, ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এগুলোর আলোর কারণে ঘুম আসতে দেরী হয়।
★বিকেলে ক্যাফেইন, নিকোটিন, এলকোহল, ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন। ক্যাফেইন এবং নিকোটিন এর কারণে ঘুম আসতে দেরী হয়
★নিয়মিত ব্যায়াম করুন,ঘুমের কমপক্ষে তিন-চার ঘন্টা আগে করুন।
★রাত্রে খুব বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঘুমের আগে পেট অতিরিক্ত ভর্তি করে খেলে ঘুম ভালো হবে না।
★আপনার বেডরুম যেন অন্ধকার ও শব্দহীন এবং খুব বেশি গরম অথবা ঠান্ডা না হয় তার দিকে খেয়াল রাখুন।শব্দের সমস্যা যাতে না থাকে 
★বিভিন্ন পজিশনে শুয়ে দেখুন কোনটাতে আপনি সবচেয়ে বেশি আরাম অনুভব করছেন
★ঘুমের আগে রিলাক্স হওয়ার জন্য গোসল করতে পারেন।
★আপনার যদি ঘুম না আসে তাহলে বিছানা থেকে উঠে পড়ুন,,ঘুম ঘুম ভাব আসলে আবার বিছানায় যান।
★যেকোন একটি বই নিয়ে পড়া শুরু করেন,গবেষণা বলে বই পড়লে ঘুমের অনেকটা উদ্রেক হয়
★ওজন কমান
★মানসিক চিন্তা থেকে একেবারে বিরত থাকুন

তাহলে দেখে নিলেনতো ইনসমনিয়া সমস্যা কেন হয়! নিয়মিত জীবনযাপনে আসলে সুস্থ থাকা যায়। তাই,নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া ও সুস্থ জীবন পরিচালনার মাধ্যমে দূরে রাখুন ইনসমনিয়াকে!

যেহেতু ইনসোমনিয়া এক প্রকার নিউরোলজিকাল সমস্যা তাই উপরোক্ত কোনো সমস্যা খুব বেশী পরিমাণে হলেই নিউরোলজিস্ট দেখাতে হবে। সহনীয় মাত্রায় হলে আপনার রেগুলার ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই শ্রেয়,প্রয়োজনবোধে তিনিই নিউরোলজিস্ট দেখাতে বলবেন।😊

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ